খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কায় ছিল পাকিস্তান। গতকাল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা হেরে যাওয়ায় ভাগ্য খুলে যায় পাকিস্তানের। বাংলাদেশকে নিজেদের ম্যাচে হারিয়ে এখন সেমিফাইনালে ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়নরা। বাতিলের খাতা থেকে উঠে এসে যেভাবে পাকিস্তান সেমিফাইনালের টিকিট পেয়েছে, তা নতুন করে উজ্জীবিত করেছে বাবর-রিজওয়ানদের। (all bangladeshi bangla daily newspaper)
পাকিস্তান দলের পরামর্শক ম্যাথু হেইডেনও সেমিফাইনালের বাকি তিন দলকে দিয়ে রেখেছেন হুঁশিয়ারি-বার্তা। শেষ ম্যাচের আগে সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণটা পাকিস্তানের নিজেদের হাতে ছিল না। বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতলেও তাদের তাকিয়ে থাকতে হতো অন্য দুই ম্যাচে। অন্তত একটি অঘটন ঘটতেই হতো।
খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ,সেই অঘটনটিই ঘটিয়েছে নেদারল্যান্ডস। ডাচ-চমকে প্রোটিয়াদের বিদায়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের ম্যাচটি হয়ে যায় অঘোষিত কোয়ার্টার ফাইনাল। আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ম্যাচটিতে কপাল পোড়ে সাকিব আল হাসানের দলের। এখন শেষ চারেও দারুণ কিছু করে দেখাতে চায় পাকিস্তান।
সেমিফাইনালে পাকিস্তান কতটা ভয়ংকর হতে পারে, তা জানাতে গিয়ে দলের পরামর্শক হেইডেন বলেন, ‘এমন ভাবনা ছিল যে সম্ভবত ফলটা ভিন্ন কিছু হতে যাচ্ছে। তবে ঠিক সে সময় পাকিস্তান ক্রিকেট দল জ্বলে ওঠে এবং নিজেদের শক্তি প্রকাশ করতে শুরু করে।
তারা এখন সত্যিকারের হুমকি হয়ে ওঠেছে। বিশ্বে এবং এই প্রতিযোগিতায় এই মুহূর্তে এমন কোনো দল নেই, যারা আমাদের মুখোমুখি হতে চাইবে। একটিও নয়। তারা ভেবেছিল, তারা আমাদের কাছ থেকে মুক্তি পেয়েছে। এখন তারা আর আমাদের কাছ থেকে পরিত্রাণ পাবে না।’
কঠিন পথে সেমিফাইনালে উঠে আসা পাকিস্তানের জন্য সাহস হতে পারে অতীত ইতিহাস। ১৯৯২ সালেও এমন খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিল পাকিস্তান। সঙ্গে নিজেদের অনিশ্চয়তার খ্যাতি তো রয়েছেই।
এই পাকিস্তান যে এখন বাকিদের ভয়ের কারণ, তা মনে করিয়ে দিয়ে হেইডেন বলেন, ‘ডাচদের জন্য সম্ভবত আমরা এখানে, সম্ভবত নয়, আসলেই ওরা না হলে আমরা এখানে আসতে পারতাম না। এখন আমরা এখানে (সেমিফাইনালে) এবং বেশ শক্তিশালীও। কারণ, কেউ আমাদের এখানে দেখতে চায়নি। বিস্মিত করার এই বিষয়ই আমাদের এগিয়ে রাখছে।
আগামীকাল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বেলা দুইটায়। এই ম্যাচ নিয়ে কি ভাবছে প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড সেটিও জানা গেল টিম সাউদির কাছ থেকে। সাবেক চ্যাম্পিয়নদের পিসিবি
একদমই হালকাভাবে নিচ্ছে না কিউইরা। দলটির অভিজ্ঞ এই পেসার বললেন, পাকিস্তান যে ভয়ঙ্কর দল ভালো করেই জানা তাদের।
টুর্নামেন্টের গত ৭ আসরে ছয়বার দেখা হয়েছে এই দুই দলের। যেখানে চারবার জয়ের স্বাদ পেয়েছে পাকিস্তান, দুইবার নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে স্রেফ একবার কেবল নক-আউট পর্বে মুখোমুখি হয় তারা। ২০০৭ সালের সেমি-ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল পাকিস্তান।
এবার হয়তো আগেভাগেই বিদায় নিতে হতো বাবরদের। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ডাচদের চমক জাগানো জয়ে পথ খুলে যায় তাদের জন্য। বাংলাদেশকে হারিয়ে কাজে লাগায় অপ্রত্যাশিতভাবে পাওয়া সুযোগ। সেমি-ফাইনালে ওঠার শক্ত ভিত নিউজিল্যান্ড গড়ে ফেলে সুপার টুয়েলভ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই, অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে। আফগানিস্তানের সঙ্গে তাদের ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে জিতে জায়গা করে নেয় তারা শেষ চারে।
মুখোমুখি লড়াইয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে বেশ পিছিয়ে নিউজিল্যান্ড। টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের ২৮ বারের দেখায় ১৭ ম্যাচে জিতেছে পাকিস্তান। বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার আগে ঘরের মাঠে খেলা ত্রিদেশীয় সিরিজে ফাইনালসহ দুই ম্যাচে বাবর-রিজওয়ানদের বিপক্ষে হেরেছে কিউইরা।
গত বিশ্বকাপের রানার্স আপ নিউজিল্যান্ড তাই পাকিস্তানকে বড় হুমকি হিসেবেই দেখছে। আরেকবার ফাইনালে খেলার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামার আগে সাউদির কণ্ঠে শোনা গেল প্রতিপক্ষের প্রতি সমীহ, ‘শেষ চারে জায়গা করে নেওয়া সব দলেরই (শিরোপা জেতার সুযোগ থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা অনেক খেলেছি এবং আমরা জানি, তারা খুবই ভয়ানক দিল। কৃতিত্ব তাদের দিতে হবে।
তারা সম্ভবত এটা ভেবে নিয়েছিল যে, তাদের খুব বেশি সুযোগ নেই। কিন্তু তারা আরেকটি ভালো পারফরম্যান্স করেছে। সেমি-ফাইনালে তারা হবে বিশাল এক হুমকি।’ গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিশ্বকাপে খুব কাছে গিয়েও শিরোপা ঘরে তুলতে পারেনি নিউজিল্যান্ড।
ফাইনালে হেরে যায় তাসমান সাগর পাড়ের আরেক দেশ অস্ট্রেলিয়ার কাছে। সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতে এবার স্বাভাবিকভাবেই ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে চাইবে কেন উইলিয়ামসনের দল। তবে সাউদি বললেন, তাদের ভাবনায় আপাতত পাকিস্তান ম্যাচ, *ওই পর্যায়ে (ফাইনালে) যাওয়ার আগে আমাদের এখনও অনেক ক্রিকেট খেলতে হবে। পাকিস্তান মানসম্মত একটি দল এবং বুধবার (কাল) তাদেরকে টপকে যেতে নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে হবে। সেমি-ফাইনাল রোমাঞ্চকর ম্যাচ।
এই ম্যাচের জন্য আপনি উন্মুখ থাকবেন, শেষ দুই ম্যাচে লড়াই করতে চাইবেন। আশা করি আমরা যেভাবে খেলছি সেভাবেই চালিয়ে যেতে পারব এবং সেমিতে আরেকটি ভালো পারফরম্যান্স করতে পারব।’
মুখোমুখি লড়াইয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে বেশ পিছিয়ে নিউজিল্যান্ড। টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের ২৮ বারের দেখায় ১৭ ম্যাচে জিতেছে পাকিস্তান
আরও পড়ুনঃ All bangladeshi bangla daily newspaper
- এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।